Ae Dil Hai Mushkil সিনেমাটি দেখতে দেখতে ভুলেই গেছিলাম যে এটা করণ জোহর পরিচালনা করেছেন, এটা সম্পূর্ণ ভাবে ইমতিয়াজ আলি ঘরানার ছবি। ককটেল, রকস্টার, তামাশা ইত্যাদি সিনেমার সংমিশ্রণ।
প্রেম নিয়ে যাদের অনুভুতি প্রবল, বিশেষ করে এক প্রেমে যারা বিশ্বাসী তারা হয়ত প্রথম ২০ মিনিট বসে দেখতে পারবেন না। যে যার সাথে পারছে শুয়ে পড়ছে, যাকে খুশী চুমু খাচ্ছে, যেখানে খুশী শুরু হয়ে যাচ্ছে। আমি অনেক কষ্টে এই প্রথম ২০ মিনিট সময় পার করেছি। মাথা ভো ভো করছিল। একটা সময় ছিল যখন ব্রেক আপ বলে কিছু ছিল না, তারপর সময় এল, ব্রেক আপ হয়ে মধ্যিখানে একটা স্যাড পিরিয়ড কাটানোর পর আবার নতুন প্রেম। আর এখন ?? এখন নতুন প্রেম শুরু হয়, তারপর আর পুরোনোকে ভালো লাগে না এবং তখন হেন তেন প্রকারে ব্রেক আপ নিতে হয়।
রনবীর কাপুর এবং অনুষ্কা শর্মা নিজেদের প্রেমিক প্রেমিকার সাথে খিটিমিটি করে বারে আলাপ হয়েই সেক্স করতে চাইলে সেটা দোষের নয়, কিন্তু তাদের প্রেমিক প্রেমিকারা যখব বারে আলাপ হয়ে সেক্স করে তখন তারা ভিলেন ?? বাহ রে বলিউড !!!
যাই হোক, যেটা বলছিলাম, কাহিনীতে প্রেম আসে ফওয়াদ খানের প্রবেশের সাথে সাথে, এবং এই 'বেলেল্লাপনা' ব্যাপারটা ধীরে ধীরে প্রেমের দিকে টার্ন নেয়। এখন কে যে কার প্রেমিকা কেউ জানে না, নিজেরাই বোঝে না। অনুষ্কা রনবীরকে ভালোবাসে না। মানে ভালোবাসে কিন্তু প্রেম করে না। মানে প্রেম করে, কিন্তু সেই রকম প্রেম না। মানে কি যে আসলে করে নিজেই সঠিক জানে না। গোটা সিনেমাতে বোঝা যায় নি।
সেদিক থেকে রনবীর কাপুর খুব পরিষ্কার, করণ জোহর তার প্রথম ছবি থেকে এক কথার লোক, 'লেড়কা লেড়কি কভি দোস্ত নেহি হো সকতে, শালা পেয়ার (পড়ুন সেক্স) বিচ মে আ যাতা হে'। এখন আপনি বলতে পারেন বন্ধু বন্ধুতে সেক্স হলে ক্ষতি কি ??
যাই হোক, গল্পে আসি। প্রেমে ব্যাথা নিয়ে রনবীর হাজির হয় ঐশ্বর্যার দ্বারে। অনুষ্কার প্রতি রনবীরের এই যে এত গভীর প্রেম যার জন্যে হয়ত এক সিন আগে আপনি চোখের জল ফেলেছিলেন, পরদিন সকালেই সেই রনবীর, ঐশ্বর্যার নেশায় মেতে ওঠে। তিনমাস পর দ্বিতীয় দেখাতেই বিছানায় খেলা শুরু। বাহ রে প্রেম !!! তুমি কি এখন বেঁচে আছ ??
ফওয়াদ খান অভিনীত চরিত্রটাই বাস্তব সম্মত মনে হল। দুঃখ আছে, যেমন সবার থাকে, কিন্তু তার জন্যে ন্যাকামি নেই। 'আহা আমার একারই যেন সব দুঃখ' এরকম ভাব নেই। যাই হোক, সারা সিনেমায় প্রেম (পড়ুন যৌনতার ক্ষিদে) দেখিয়ে শেষ মেশ একটু জ্ঞান না দিলে প্রেমের মাহাত্ম্য থাকে কই ! তাই হঠাৎ, যারা সারা জীবনে শুধু সেক্স খুঁজে গেল তারাই শেষ দিকে কি রকম যেন একে অপরের প্রতি ভগিনী নিবেদিতার মত সেবাগত প্রাণ হয়ে ওঠে।
না আমি বলছি না, সিনেমাটা ভালো লাগবে না। প্রেমের এবং বিরহের দৃশ্যগুলি যথেষ্ট বেদনা দায়ক। কিন্তু ঐ যা বললাম, সেই বিরহের কি মূল্য যদি পরদিনই তুমি অন্য একজনের বিছানায় শুয়ে পড়ো ??
রনবির কাপুর ভীষণই ভালো অভিনেতা। এই সিনেমায় তার অভিনয় ঐ রকস্টার আর তামাশার মতই হয়েছে। অনুষ্কা ভালো মেয়ে। ঐশ্বর্যা তো একজন পুরো খা*কির চরিত্রে অভিনয় করেছে (পোশাক না খুলেও নোংরা হওয়া যায়)। রনবীর কাপুর একজন পার্ভাটের চরিত্র করেছে। এর থেকে ইমরান হাশমি ভালো। সেক্স করার জন্যে প্রেমের অজুহাত বা আড়াল দিয়ে প্রেম কে কলুষিত করে না। সেক্সই যদি করবি তাহলে সেক্সই কর, কে না করেছে ?? কিন্তু এত প্রেম প্রেম মাড়ানর কি আছে ??
যাই হোক, হলে গিয়ে এই সিনেমা দেখার কোনো মানে হয় না। নেট থেকে নামিয়ে নিন। আর আমার কথা যদি শোনেন তাহলে বলি, এইসব না দেখে আর একবার বরং যব উই মেট দেখুন, বরফি দেখুন, তামাশা দেখুন, লাভ আজ কাল দেখুন। কিছু না পেলে আরো একবার কুছ কুছ হোতা হে দেখুন। প্রেম সম্পর্কে ভালো ধারণা হবে, Ae Dil Hai Mushkil দেখলে প্রেমকে আর প্রেম করতে ইচ্ছে করবে না।
সিনেমার একটি বিশেষ দৃশ্যে শাহরুখ খান এসে বিনে পয়সায় কিছু জ্ঞান দিয়ে যায়। শাহরুখ খান দিচ্ছে বলেই যে জ্ঞানটা খুব ভালো হবে সেরকম কোনো মানে নেই। এক জায়গায় আলিয়া ভট্টকে খানিক ক্ষণ দেখানো হয়েছিল, উফফ কি লাগছিল তাকে !! একজন ডিজের ভূমিকায় তিনি নিজের কোটি টাকার টোল দেখিয়ে বিদেয় নিয়েছেন। ও হ্যাঁ, ডিজে বলতে মনে পড়ল, এই সিনেমার মিউজিক - এ নিয়ে কিছু না বলাই ভালো, কারণ ওটা যার যার ব্যাপার। কোন সুর কাকে দোলা দেয় সেটা বলা মুশকিল। আমা্য যেমন Title Song ছাড়া আর কোনো গানই সেই ভাবে দাগ কাটে নি।
No comments
Post a Comment