শুধু কবিতা সাহিত্য সঙ্গীত নয়, সিনেমাও পরিচালনা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
অনেকেই জানেন, তবু যারা জানেন না তারা অনেকেই হয়ত এটা শুনে অবাক হবেন যে রবীন্দ্রনাথ সিনেমা পরিচালনাও করেছিলেন। ১৮৯০ সাল থেকেই ইউরোপে সিনেমা শুরু হয়ে যায়। ১৮৯৫ সালে বানিজ্যিক ভাবে লুমিয়ের মুভিং পিকচার্স কোম্পানী প্রথম তাদের সিনেমার প্রদর্শনী করেন। এর ঠিক এক বছর পর অর্থাৎ ১৮৯৬ সালে ভারতের মুম্বইতেও ঐ একই কোম্পানী আরও একটি প্রদর্শনী করে। ভারতের প্রথম পূর্ণ্যদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র ছিল রাজা হরিশচন্দ্র এবং সেটি রিলিজ করেছিল ১৯১৩ সালে। এছাড়াও জেনে রাখা যেতে পারে ভারতের প্রথম টকি (কথা বলা ছবি) আলম আরা মুক্তি পায় ১৯৩১ সালে। রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশায় সিনেমা সারা পৃথিবী তথা ভারতে পুরো মাত্রায় ছেয়ে গেছিল।
সিনেমা বানাতে রবীন্দ্রনাথের নিজের কতটা ইচ্ছে ছিল সেটা অবশ্য জানা যায় না, তবে ঘটনা হল কলকাতার নিউ থিয়েটার্সের কর্ণধার বি এন সরকার রবীন্দ্রনাথকে সিনেমা বানানোর জন্যে উৎসাহ ও প্রস্তাব দেন। রবীন্দ্রনাথ রাজী হন। টালিগঞ্জের NT Studio তে টানা চার দিন ধরে শুটিং চলে। এই ছবির মিউজিক দিয়েছিলেন ধীরেন্দ্রনাথ ঠাকুর। ক্যামেরা করেছিলেন সুবোধ মিত্র।
সিনেমার মত করে এই ছবির শুটিং হয় নি। একটি বড় মঞ্চে নটীর পুজা যেভাবে এর আগে মঞ্চস্থ হয়ে এসেছে সেভাবেই অভিনীত হতে থাকে এবং বিভিন্ন দিক পালটে পালটে তার শুটিং হয়। এই সিনেমার সব থেকে বড় আকর্ষণ ছিল পরিচালনার পাশাপাশি এতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজে অভিনয়ও করেছিলেন।
শোনা যায়, প্রথম দুদিন কাজ করার পর রবীন্দ্রনাথ সিনেমা পরিচালনায় বিরক্ত হয়ে পড়েন এবং বাকি দুদিন সুবোধ মিত্রকেই পরিচালনার দায়িত্ব নিতে হয়।
২২শে মার্চ ১৯৩২ সালে কলকাতার চিত্রা প্রেক্ষাগৃহে নটীর পূজা মুক্তি পায়। ভাবা হয়েছিল যেহেতু স্ব্যং রবীন্দ্রনাথ এতে অভিনয় করেছেন তাই এটি সাফল্য পাবে। কিন্তু এটি আশানুরূপ ফল করেনি। বি এন সরকার মনে করেছিলেন অতি জলদি শুটিং সেরে ফেলতে গিয়ে সিনেমার মান ধরে রাখা যায় নি।
No comments
Post a Comment