কলকাতা থেকে দীঘা মাত্র দুই ঘন্টায়। ৯০ কিলোমিটার বেগে ছুটবে জাপানী মেট্রো রেল।
সম্প্রতি কেন্দ্র সরকারের হাঁড়ির ভিতর থেকে একটি খবর প্রায় চুরি করে নিয়ে এসেছি আমরা। আগামী মাসে যে রেল বাজেট প্রকাশ হতে চলেছে সেখানে এরাজ্যকে খুশী করার জন্যে কেন্দ্র সরকার এক অভিনব প্রকল্প করেছেন। তারা ঘোষণা করতে চলেছেন এক অসম্ভব প্রকল্প। যদিও কেন্দ্র সরকারের ইদানিং কালের নানান ঘোষণার কথা মাথায় রেখে সকলেই এক বাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন যে হ্যাঁ, আপামর দেশবাসীর চক্ষু চড়কগাছ করার এলেম তাদের আছে। সেই এলেম দেখাতেই আগামী মাসের বাজেটে সরকার ঘোষণা করতে পারে কলকাতা - দীঘা মেট্রো প্রকল্পের। শোনা যাচ্ছে এই প্রকল্প উদ্বোধন করতে আনা হবে তামিল ছবির বিখ্যাত অভিনেতা শ্রী রজনীকান্ত মহাশয়কে। বাই গড!!
প্রকল্পের বরাত পেয়েছে জাপানী সংস্থা। এতে আর অবাক হওয়ার কি আছে। একমাত্র জাপানীরাই পারে বড় বড় জিনিস তৈরী করতে। প্রকল্পের কাজ শুরু হবে পয়লা এপ্রিল ২০১৭ থেকে। কোলাঘাটের কাছে কিছু বস্তিবাসিকে নিয়ে উচ্ছদের সমস্যা হতে পারে ভেবে তাদের জন্যে সম্পূর্ণ বিনে পয়সায় ৩দিন ও ২ রাতের দীঘা প্যাকেজ ঘোষণা করার কথা ভাবা হচ্ছে।
এ নিয়ে আসুন সাধারণ জনগনের বক্তব্য শুনে নেওয়া যাক।
যাদবপুর থেকে শ্রীমতি মুখেহাসি পোদ্দার বলেছেন, 'গতবার বরকে বন্ধুর বিয়ে বলে ফেসবুকের নতুন ফ্রেন্ডকে নিয়ে দীঘায় এক দিনের জন্যে গেছিলাম। ফেরার সময় রাতের ট্রেনটা লেট করল বলে কি ভয় লাগছিল, যদি বর বুঝে যায়। সে যাত্রায় বেঁচে গেছি, মেট্রো চালু হলে আমার আর কাল্টুদার হেব্বী সুবিধা হবে। যখন তখন যাওয়া আসা করা যাবে' বোঝাই যাচ্ছে কাল্টুদাই তার ফেসবুকের সেই হিরো যিনি মিস্টার পোদ্দারকে রেগুলার ভালোই মারছেন।
বারাসাতের যুবক স্যান্ডো চক্রবর্তী বলেছেন, মাল খাওয়ার জন্যে সবথেকে বেস্ট জায়গা দীঘার বিচ। প্রাইভেট অফিসে ৭২ ঘন্টা ডিউটি আর ২০ মিনিটের ছুটি। এত্ত অল্প সময়ে কি আর দীঘায় যাওয়া যায়। ঐ বাড়ির ছাদে বসেই মাল খেতে হয়। মেট্রো চালু হলে আমার হেব্বী সুবিধা হবে। পাশের বাড়ির কাকীমার সাথে আমার একটু লটর পটর আছে বুঝলেন তো। মালটার স্বামী মাঝে সাঝেই এদিক ওদিক যায়। কাকিমাকে নিয়ে টুক করে দীঘা যাওয়া যাবে।'
সেরা উবাচ দিয়েছেন মেচেদার উঠতি নেতা বাবলু পেহেলবান, "যিখান থেকে মিট্রো যাবে সেইখানে হামার আড়াই বিঘে জমি আছে। হামার সোব কালো ধোন সাদা হয়ি গেল।"
শুরুতে সপ্তাহে তিনটে করে ট্রেন চলবে। শুক্র শনি রবি। একটা যাবে, একটা আসবে। পরে এটাকে রেগুলার করার কথা ভাবা হচ্ছে। দিদিমণি অবশ্য বলেছেন, এইভাবে রাজ্যের মানুষকে বঞ্চণা করা যাবে না। প্রত্যেক দিনই মেট্রো না চালালে উনি ডেঞ্জার লাইনের কারেন্ট সাপ্লাই অফ করে দেবেন। ট্রেন কেন্দ্রের হলে কি হবে, বিদ্যুৎ তো আমার !!! দেখা যাক, শেষ অবধি কি হয়। তবে দীঘায় প্রান্তিক স্টেশানের নাম মাতঙ্গীনি হাজরার নামে রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। মেট্রোতে রবীন্দ্র সঙ্গীত বাজানো আবশ্যিক। মিউজিক বন্ধ হবে না, প্রয়োজনে টিকিটের সাথে বিনামূল্যে কানে গোঁজার তুলো সাপ্লাই করা হবে।
দেখা যাক, কতদূর সফল হয় এই প্রকল্প। নাকি দেশের আরো নানান প্রকল্পের মত এটিও শুধু খাতায় কলমেই বাসা বেঁধে থাকবে। আপনি কি চান ?? এই নিয়ে আপনার মতামত কি। ইচ্ছে হলে একটুখানি কমেন্ট আপনিও লিখুন না। কমেন্ট লিখতে তো আর ট্যাক্স লাগছে না।
No comments
Post a Comment