বিহারের পর কি এবার পশ্চিমবঙ্গেও ব্যান হতে চলেছে মদ্যপান?...
কথায় আছে বাঙ্গালী আজ যা ভাবে বাকি ভারত নাকি সেটা ভাবে আগামীকাল। কিন্তু এক্ষেত্রে একটু উলটো। গান্ধীজির জন্মস্থান গুজরাট তাই বহু বৎসর ধরেই গুজরাটে মদ্যপান নিষিদ্ধ। গান্ধীজির জন্ম-মৃত্যুদিনে সারা ভারতে ড্রাই ডে পালন করা হয়। সম্প্রতি নিতীশ কুমার বিহারে মদ্যপান নিষদ্ধ করেছেন। বেশ বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। ভোট ব্যাঙ্কের তোয়াক্কা না করে এ কাজ করাটা চাড্ডিখানি কথা নয়। প্রচুর বিরোধী কথা বার্তাও সামনে এসেছে। হয়ত কিছু ব্যক্তি মদ না পেয়ে পাগলের মত আচরণ করছেন এবং কিছু মানুষ হয়ত মারাও গেছেন।
সমস্ত বিরোধকে তোয়াক্কা না করে এই ব্যবস্থা কতদিন চালু থাকবে বা চিরস্থায়ী হবে কিনা সেটা সময়ই বলবে। তবে এটা তো সকলেই মানবে যে মদ না খাওয়ার থেকে মদ খেলেই ক্ষতি বেশী। শুধুমাত্র রাজস্ব আদায়ের দিকে মন দেব আর সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের দিকে ফু-টুকুও দেব না এটা নিতীশ কুমারের পদ্ধতি নয়।
এই ব্যবস্থায় সংলগ্ন রাজ্য ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের মদ্যপায়ীরা অনেকেই আশঙ্কিত। এ রাজ্যেও কি মদ্যপান নিষিদ্ধ হতে চলেছে?? গত দশ বছরে এ রাজ্যে এখন মুদি খানার মত মদের দোকান খুলেছে। প্রতি ১৫ মিনিটের দূরত্বে একটি করে মদের দোকান এ রাজ্যে অবস্থিত। পাশে স্কুল কলেজ ছোটদের পার্ক কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা না করেই পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে রমরম করে চলছে মদের দোকান। চলছে কারণ এখন লালু ভুলু কালু সকলেই মদ খায়। জাতির আদর্শ যারা যেমন সেরা ক্রিকেটার, উঠতি নায়ক, স্বল্প বসনা নায়িকা সকলেই দিনে ৩৭ বার মদ্যপানের জন্য টিভিতে উসকানি দিচ্ছেন। সুতরাং এ ভারতীয় ল্যাদখোর পাবলিক তোমাকেও খেতে হবে। না খেলেই ইজ্জত আর থাকে না।
দশ বছর আগে মদ বিক্রি হত আড়ালে, একটু রেখে ঢেকে। এখান থেকে ৪০ মিনিট হেঁটে যান, তারপর বাঁদিকে একটা সরু গলি পড়বে, সেই গলির ভিতর ঢুকে তিনটে গলি ছেড়ে ডান দিকের পুঁচকে গলিতে ঢুকলে মদ পাওয়া যেত। আদ্দেক লোক জানতই না কোথায় মালটা মেলে। চক্ষু লজ্জায় উঠতি ছোঁড়ারা সেটা জিজ্ঞেস করতেও পারত না। তাই কলেজ না পেরোলে সেকালের প্রায় সকলেরই মদ চাখা হত না। এখন ক্লাস নাইন থেকেই সব ওস্তাদ। চক্ষুলজ্জা কি জিনিস??
সুতরাং পাশের রাজ্যে মদ বন্ধ হলে এই রাজ্যের মাতালদের চিন্তা তো বাড়বেই। পড়াশোনা শেষ করে চাকরী হচ্ছে না। নিজের গ্রামে চাষ হচ্ছে না। ডিসেম্বরে শীত করছে না। এসবের মতই এখন এ রাজ্যের মহা চিন্তা ‘দাদা নববর্ষের দিন মদ পাওয়া যাবে তো’!! অনেকেই বলবে মদ নিষদ্ধ হলেও কোনো লাভ হবে না। চোরাগোপ্তায় ঠিক বিক্রি হবে। হয়ত হবে, কিন্তু তখন ‘বিরাট কোহলী আজ চারটে ছয় মেরেছে চল মদ খাই’ টা থাকবে না। যে ছেলে ‘ধুর ভাল্লাগছে না চল মদ খাই’ বলত সে একথা কমিয়ে দেবে। কারণ চোরাগোপ্তায় দাম বেশী হবে। সিগারেট দাম বেড়ে যাওয়ায় বহু মানুষ নিজেকে বিড়িতে ট্রান্সফার করেছে।
এ জেনারেশানের যারা মদ খায় তাদের হয়ত প্রথম প্রথম অসুবিধা হবে কিন্তু মদ নিষিদ্ধ হলে পরবর্তী জেনারেশানের উপকার হবে। যে লোক সারা দিন চব্বিশ ঘন্টা মদ খায় সেও চায় না তার সন্তান মদখোর হোক। তাহলে কিসের বিরোধিতা ?? নিজেদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে সুস্থ এবং স্বাভাবিক করতে পশ্চিমবঙ্গেও মদ নিষিদ্ধ করার দাবী রেখে গেলাম। সহমত হলে এই পেজটা শেয়ার করুন এবং সকলকে এই পথে সামিল করুন। ধন্যবাদ।
No comments
Post a Comment