Header Ads

ad728
  • Breaking News

    এটা কোনো থিওরি বা এক্সপার্ট আলোচনা নয়। এটা কোনো সংবাদ নয়। একান্ত নিজস্ব জীবনে একটা ঘটনাকে বর্ণনা করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনে আমি সেটাই বলতে চেয়েছি যেটা আমি মানি। আমি মানি আতঙ্কবাদের কোনো জাত বা ধর্ম হয় না। ধর্ম দিয়ে অপরাধীকে শনাক্ত করা যায় না। যারা করে তারা আমার চোখে এক একজন মুর্খ, গোঁদা বাংলায় গান্ডু।

    ধরুন গব্বর সিং এক পুলিশ ইন্সপেক্টরের বাড়িতে ঢুকে তার পরিবারর সকলকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে দিল, শেষে সেই ইন্সপেক্টরের দুই হাত কেটে দিল। সমস্ত সিনেমা হল জুড়ে সকলে ভীষণ দুঃখে, কষ্টে, রাগে এবং ঘৃণায় ফুঁসছে। অথবা মুগেম্বো যখন ছোট্ট বাচ্চাদের খেলার পার্কে পুতুলবোমা রেখে আসে তখন সকলেরই রাগ হয় কষ্ট হয়। কিন্তু সেই সময় আমি কখনও শুনিনি কেউ বলছে ‘শালা হিন্দু গুলো এইরকমই হারামী’। কিন্তু পর্দায় যখন কোনো মুসলিম উগ্রবাদীকে দেখানো হয় তখন কেন প্রায় সকলে সমস্বরে উচ্চ কন্ঠে বলে থাকে ‘শালা মুসলমান গুলো এমনই হারামী হয়’। কেন ?
    গতকাল নন্দনে নীরজা দেখছি, পাশে একটা ৪০/৪৫ বছরের টেকো বুড়ো লোক বসেছিল। সাথে একজন মহিলা ছিল, কথা বার্তায় ওনার নিজের বউ বলে তো মনে হচ্ছিল না। সম্ভবত অফিসের কোনো মালকে পটিয়ে নিয়ে এসেছে, সে আবার ব্যাগে করে ঝুড়ি ভাজা, চিপস, কোল্ড ড্রিঙ্কস ইতাদি নিয়ে এসেছে। সিনেমা দেখতে এসেছে না পিকনিকে এসেছে বুঝতে পারছিলাম না।

    সে যাই হোক। সিনেমায় যখন প্লেনে উগ্রবাদীরা অত্যাচার চালাচ্ছে আমার পাশের লোকটা কিছুটা জোরেই তার পাশে বসা নায়িকাকে বলে উঠল ‘দেখেছ, এই জন্যেই আমি মুসলমান গুলো কে দেখতে পাই না’। কথাটা শোনার পর মেজাজটা পুরো খিচ খেয়ে গেল। শালা কিছুতেই আর সিনেমার দিকে মন দিতে পারছিলাম না। ব্যাটাকে ধরে খানিক ক্যালাতে পারলে হেব্বী হত। রাগ হচ্ছে কিন্তু কিছু করতে পারছি না। শালাকে ঠ্যাং দিয়ে একটা জোর গুঁতো দিলাম, সরিও বলিনি। বাকি সারা সিনেমায় তাকে হ্যান্ডেলে কনুই রাখতে দিই নি। সিনেমাতে মন দেওয়ার চেষ্টা করলাম। হঠাৎ এক জায়গায় বাঞ্চোতটা আবার বলে উঠল ‘মুসলিমগুলো বহুত হারামী হয়’। আমি এবার আর পারলাম না। শুধু মুখেই বললাম, ‘দাদা Stop’। কি বুঝল কে জানে, চুপ করল।


    আমি কিন্তু মনে মনে প্লান করে নিয়েছি, শালা আর একবার বললেই ঠাঁটিয়ে মাথায় গাট্টা মারব। কিন্তু পরমুহুর্তেই প্লান চেঞ্জ করলাম। এখানে হাঙ্গামা বাঁধালে ঝামেলা বাঁধার চান্স আছে। শালা সরকারি জায়গা। তার উপর কাল আবার ডিউটি আছে। অফিসে নো ওয়ার্ক নো পে। বসের মুখখানা মনে পড়ল। জায়গাটা সরকারি হলেও আমি শালা সরকারি কাজ করি না। হারামীটা বেঁচে গেল।

    কিন্তু কিছু একটা তো করা উচিত। কি করি কি করি ?? এবার মাথায় একটা প্লান এল। সিনেমা শেষ হলে সকলে যখন লাইন দিয়ে বেরোচ্ছে আমি তখন ফোনটা বার করে একা একাই কথা বলতে শুরু করলাম। বেশ জোরে। - হ্যাঁ এই সিনেমা শেষ হল, ভালো হয়েছে, তোরা দাঁড়া আমি আসছি। আর বলিস না, একটা টেকো বুড়ো শালা পাশে বসে বহুৎ ঝামেলা পাকাচ্ছিল। মালটা শালা না জানি কার বউকে ভাগিয়ে নিয়ে এসেছে। অশিক্ষিত, গান্ডুটা বলে নাকি মুসলমান গুলো এরকমই হয়। দুবার বলেছিল। আর একবার বললেই মাথার টাকে গাট্টা মারতাম। শুয়োরের বাচ্চা। মালটাকে চিনি, মাঝে মধ্যেই নন্দনে আসে। আবার যদি বলতে শুনি টাকে আলকাতরা ঢেলে দেব। হ্যাঁ হ্যাঁ আসছি দাঁড়া। দু-মিনিট।’

    যার নামে খিস্তি দিচ্ছি সে আমার দু-সিঁড়ি সামনে। বোকাচোদাটা আর কখনওই পাবলিক প্লেসে মুসলমানকে খিস্তি দেবে না। দু-একবার পিছন ঘুরে আমাকে দেখল, আমিও ওর চোখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। বউটা দেখলাম, রুমাল বার করে মুখ মুছছে, শালা মুখ মুছছে না মুখ লুকোচ্ছে কে জানে !!!

    No comments

    Post Top Ad


    Post Bottom Ad

     downloads